অব্রাহামের জীবনীর সংক্ষিপ্ত আলোচনা
ঈশ্বরের বন্ধু
প্রকাশক: বাইবেল স্টুডেন্টস্ ফেলোশীপ অব বাংলাদেশ
মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দলগত বাইবেল পুস্তক
এই পুস্তিকার বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য
অব্রাহাম ঈশ্বরের বন্ধু ছিলেন যিনি বিশ্বাসে ও বাধ্যতায় ঈশ্বরের ডাক শুনে, আত্মীয় স্বজন ও উন্নত একটি শহর ছেড়ে অজানা একটি দেশের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আসলেন। বাইবেল বলে, “বিশ্বাসে অব্রাহাম, যখন আহুত হলেন, তখন যে স্থান অধিকারার্থে প্রাপ্ত হইবেন, সেই স্থানে যাইবার আজ্ঞা মান্য করিলেন,এবং কোথায় যাইতেছেন তাহা না জানিয়া যাত্রা করিলেন” ইব্রীয় ১১:৮ পদ।
অব্রাহামের এই ভক্তি ও প্রত্যাশার পেছনে কি উদ্দেশ্য ও কারণ ছিল?
বাইবেলে লেখা আছে “কারণ তিনি ভিত্তিমূল বিশিষ্ট সেই নগরের অপেক্ষা করিতেছিলেন, যাহার স্থাপনকর্ত্তা ও নির্ম্মাতা ঈশ্বর” (ইব্রীয় ১১:১০ পদ)।
তার বিশ্বাসের কারণে ঈশ্বর তাকে ধার্ম্মিক গননা করলেন (আদি ১৫:৬পদ) বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে তার এই বিশ্বাস পরীক্ষিত ও পরিপক্ক হয়েছিল। একটি চুড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি ঈশ্বরের অনূগ্রহ লাভ করে বুঝতে পারলেন যে, পাপী মানুষের উদ্ধারের জন্য ঈশ্বরের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা আছে (আদি ২২:১৪ পদ)।
যতজন এই পুস্তকের সাহায্যে অব্রাহামের জীবন সম্মন্ধে শিক্ষা লাভ করবেন তারাও যেন তার মত ঈশ্বরের ডাক শুনে বিশ্বাসে ও বাধ্যতায় চলতে পারেন এবং ঈশ্বরের বন্ধু এই নাম পেতে পারেন। এই উদ্দেশ্যেই ৮টি অধ্যয়ন তৈরী করা হয়েছে।
যীশু বলেন, ‘আমি তোমাদিগকে যাহা কিছু আজ্ঞা দিতেছি, তাহা যদি পালন কর, তবে তোমরা আমার বন্ধু’ (যোহন ১৫:১৪পদ)।
এই পুস্তকের ব্যবহার বিধি
বাইবেল আলোচনা যাতে সুন্দও ও ফলপ্রসু হতে পাওে এর জন্য নিম্নলিখিত পরামর্শ দেওয়া হল। যথা:
১. আলোচনার জন্য উপস্থিত ভাইবোনদের কয়েকটি ছোট ছোট দলে বিভক্ত করূণ।
২. প্রত্যেক দলের জন্য একজন দলনেতা বা দলনেত্রী নিযুক্ত করুন।
৩. প্রার্থনার দ্বারা দলের কাজ শুরু করুণ।
৪. নির্দিষ্ট বাইবেল অংশটি মনোযোগ সহকারে পাঠ পড়ুন।
৫. ধারাবাহিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর বের করতে চেষ্টা করুণ।
৬. দলের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রত্যেক জনকে উত্তর দিতে উৎসাহ ও সুযোগ দিন। উত্তর সন্তোষজনক হয়েছে কিনা এই বিষয়ে প্রত্যেকের মত প্রকাশের সুযোগ করে দিন।
৭. চিন্তার জন্য যে সমস্ত বিষয় রয়েছে সেগুলো বিশেষ মনোযোগ সহকারে আলোচনা করুণ। বর্তমান সময়ে ও পরিস্তিতিতে এই শিক্ষা কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই দিকে চেষ্টা করুন এবং পরস্পরকে উৎসাহ দিন।
৮. পদ মুখস্ত হলে পরে পরস্পরের জন্য বলুন।
৯. প্রার্থনা করে দলীয় আলোচনা শেষ করুণ।
এই দলীয় বাইবেল আলোচনার ফলে যেন আপনি ঈশ্বরের উপরে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেন এবং শেষ পর্যন্ত সেই বিশ্বাসে স্থির থাকতে পারেন এই প্রার্থনা করি।
প্রকাশক
অধ্যয়ন ১: অব্রামের বাধ্যতা
ঊর নামে একটি উন্নত শহর ছিল। সেখানকার মানুষ শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান ছিলেন। তারা লেখাপড়া জানতেন, শহরে পাকা রাস্তা ও দালান ছিল। ঘরে ঘরে জলের ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু তারা চাঁদের দেবতাকে পূঁজা করতেন। এই দেবতার উদ্দেশ্যে চার তলার সমান উচু ঘর তৈরী করেছিল। ঐখানকার লোক সংখ্যা ছিল পাঁচ লক্ষ্যের মত। এদের মধ্যে অব্রাম নামে একটি লোক ঈশ্বরকে চিনতেন ও ভয় করতেন। পরবর্তী সময়ে ঈশ্বর ঊর নগর একেবারে ধ্বংস করে দিলেন। তিন হাজার বছর পরে বালির নিচে বর্তমান ইরাক দেশে এই ঊর শহরের সমস্ত চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঊরকে ধংস করার আগে ঈশ্বর অব্রামকে বলেছিলেন, ‘তুমি তোমার দেশ ও আত্মীয় স্বজন ছেড়ে আমি যে দেশ তোমাকে দেখাব সেই দেশে যাও’।
অব্রামের প্রথম যাত্রা ছিল ফরাৎ নদীর পাশ দিয়ে ৬০০ মাইল হারণ পর্যন্ত। কয়েক বছর পরে তিনি বাকী ৪০০ মাইল দূর অতিক্রম করে কনান দেশ পর্যন্ত আসলেন।
আলোচ্য প্রশ্ন:
ঊর থেকে হারণ পর্যন্ত (৬০০ মাইল)
বাইবেল পাঠ: আদি ১১:২৭-৩২ পদ।
১। পরিচিতি: (আদিপুস্তক ১১:২৭-২৯ পদ)
ক. অব্রামের বাবার নাম কি?
খ. অব্রামের দুই ভাইয়ের নাম কি কি?
গ. তার জন্ম কোথায়?
ঘ. অব্রামের স্ত্রীর নাম কি?
২। পরিকল্পনা: (আদিপুস্তক ১১:৩১-৩২পদ)
ক. তেরহ কাদের নিয়ে গেলেন এবং কতদুর পর্যন্ত গেলেন?
খ. তাদের পরিকল্পনা কি ছিল?
গ. তেরহ কত বৎসর বয়সে এবং কোথায় মারা গেলেন?
হারণ থেকে কনান পর্যন্ত (৪০০ মাইল)
বাইবেল পাঠ: আদি ১২:১-৯পদ।
১। প্রতিজ্ঞা: (আদিপুস্তক ১২:১-৩ পদ)
ক. ঈশ্বরের আদেশ কি ছিল? ১ পদের সাথে তুলনা করুন প্রেরিত ৭:২-৪ পদ।
খ. ঈশ্বরের পরিকল্পনা ও প্রতিজ্ঞা কি (২পদ)?
গ. ঈশ্বরের আর্শীবাদ কাদের জন্য এবং তাঁর অভিশাপ কাদের জন্য (৩পদ)?
২। পদক্ষেপ। (আদিপুস্তক ১২:৪-৯পদ)
ক. এখন অব্রামের বয়স কত? তার সঙ্গে আর কে কে ছিল (৪-৫পদ)?
খ. কনান দেশে এসে ঈশ্বর কি প্রতিজ্ঞা করলেন? (৬-৭ পদ) প্রকাশ থাকে শিখিম কনান দেশের মাঝখানে অবস্থিত।
গ. অব্রাম কিভাবে ঈশ্বরের আরাধনা করলেন (৭পদ)?
ঘ. অব্রাম কোন্ কোন্ জায়গায় গেলেন এবং কোন্ দিকে গেলেন (৬,৮,৯পদ)?
করণীয়:
ক. বাইবেলের মানচিত্র দেখে অব্রামের যাত্রাপথ বের করুন।
খ. নুতন জায়গায় গিয়ে আপনি কিভাবে ঈশ্বরের সহভাগিতা রক্ষা করতে পারেন এবং উপাসনায় অংশগ্রহণ করতে পারেন?
মুখস্ত পদ: কলসীয় ৩:১৬ পদ।
অধ্যয়ন ২: অব্রামের নিঃস্বার্থপরতা
কনান দেশে দূর্ভিক্ষ দেখা দিল। অব্রাম মিসর দেশে গেলেন। তিনি প্রাণের ভয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিলেন। তার এই ছলনা রাজার কাছে ধরা পড়ে গেল। কিন্তু ঈশ্বর তাকে এই মহা বিপদ থেকে রক্ষা করলেন। কনান দেশে এসে তিনি পূণরায় বৈথেলের যজ্ঞ বেদীর কাছে তাম্বু স্থাপন করলেন এবং সদাপ্রভুকে ডাকলেন (আদিপুস্তক ১৩:১-৪পদ)।
আলোচ্য প্রশ্ন:
অব্রাম ও লোট পৃথক হলেন
বাইবেল পাঠ: আদি ১৩:৫-১৩পদ।
১. অব্রাম ও লোটের মধ্যে কি সমস্যা দেখা দিয়েছিল (৫-৭ পদ)?
২. অব্রামের পরামর্শ কি ছিল (৮-৯ পদ)?
৩. ক) লোট যে জায়গা পছন্দ করলেন তা কেমন ছিল (১০-১২ পদ)?
খ) সেখানকার লোকদের আত্মীক ও নৈতিক জীবন কেমন ছিল (১৩ পদ)?
৪. লোট অতি আরামদায়ক জীবন পছন্দ করলেন কিন্তু সে পরিবেশ ছিল পাপে পরিপূর্ণ। তার পরিনাম কি হল (আদি ১৯:২৪-২৫পদ)?
বিশ্বাস ও নিশ্চয়তা
বাইবেল পাঠ: আদি ১৩:১৪-১৮ পদ।
১. অব্রাম পাহাড় অঞ্চলে থাকলেন যেখানে পরিশ্রম বেশী, পশুখাদ্য কম এবং জলের কষ্ট। ঈশ্বর তাকে কি করতে বললেন এবং কেন ১৪,১৫,১৭ পদ?
২. অব্রামের বংশধর কারা এবং তাদের কোথায় দেখতে পাওয়া যাবে? ১৬ পদের সাথে ত‚লনা করুণ গালাতীয় ৩:১৯; প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-১০ পদ।
৩. পশ্চিম দিকে অব্রাম কোন জায়গা পর্যন্ত গেলেন এবং ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কি করলেন (১৮ পদ)?
চিন্তার জন্য:
১. লোট কি কি ভূল করলেন? তার আচরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোন কোন দূর্বল দিক লক্ষ্য করা যায়?
২. বিশ্বাস, বাধ্যতা ও নিঃস্বার্থপরতা সম্মন্ধে আপনি অব্রামের জীবনে কি কি আদর্শ দেখতে পান?
৩. এই দুই চরিত্র থেকে আপনি যে সমস্ত উৎসাহ ও চেতনা পান সেগুলো কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন?
মুখস্ত পদ: যাকোব ২:২৩ পদ।
অধ্যয়ন ৩: অব্রামের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাস
অব্রাম ও লোট যখন পৃথক হয়ে গেলেন তখন নিজের সুবিধার জন্য লোট সুন্দর ও সবুজ দেশ পছন্দ করলেন। কিন্তু সেই দেশে জল ও খাদ্যের সুবিধা থাকলেও মেদশের মানুষ খুব খারাপ ছিল। অব্রামকে পাহপড়ী জায়গা নিতে হয়েছিল, যেখানে জল ও খাদ্য কম ছিল। কিন্তু লোটের উপর অব্রামের কোন রাগ বা হিংসা ছিল না। তিনি জানেন ঈশ্বর তাকে বলেছেন তিনি ও তার সমস্ত বংশধর এ সমস্ত দেশ লাভ করবেন। সে কারণে লোটের জন্য ভাল জায়গা ছেড়ে দিতে তিনি দ্বিধা করেননি।
আলোচ্য প্রশ্ন:
কৃতজ্ঞ হও
বাইবেল পাঠ: আদি ১৪:১৭-২০পদ।
১. অব্রাম যখন শুনতে পান শত্রুরা লোটকে চুরি করে নিয়ে গেছে তখন তিনি ৩১৮ জন লোককে নিয়ে লোট ও সমস্ত মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। ফিরবার পতে তিনি ঈশ্বরের যাজক মল্কীষেদককে কি দিবেন এবং কেন (১৯-২০ পদ)?
বিশ্বাসী হও
বাইবেল পাঠ: আদি ১৫:১-৭পদ।
১. অব্রামকে ঈশ্বর কেন ৩টি আশ্বাস দিয়েছিলেন?
২. অব্রাম মনে করতেন তার আর সন্তান হবে না এবং তার চাকরের কাছে সমস্ত সম্পদ রেখে যেতে হবে। এই বিষয়ে ঈশ্বর কি বলেন (২-৪পদ)?
৩. ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা কি ছিল (৫ পদ)?
করণীয়:
১. কি কি কারণে আপনি দান ও দশমাংশ দিবেন (১ যোহন ৪:১৯, ২ করিন্থিয় ৯:৭-৮ পদ)?
২. নিয়মিত ভাবে দান দেওয়া উচিত কেন (১করিন্থিয় ১৬:১-২ পদ)?
৩. আপনি কিভাবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক হতে পারেন (রোমীয় ৩:২২ পদ)?
মুখস্ত পদ: রোমীয় ১০:৯-১১ পদ।
অধ্যয়ন ৪: অব্রামের প্রত্যাশা
অধর্য্য হয়ে অব্রাম ও সারী নিজ বুদ্ধিমত এমন একটি কাজ করলেন যার ফলে তাদের পরিবারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিল (আদিপুস্তক ১৬:৪ পদ)। যদিও এর আগে ঈশ্বর প্রায়ই অব্রামের সাথে কথা বলতেন, কিন্তু এই ঘটনার পর ১৩ বছর যাবৎ ঈশ্বর নীরব রইলেন।
আলোচ্য প্রশ্ন:
সিদ্ধ হও
বাইবেল পাঠ: আদি ১৭:১-৮; ১৫-১৬ পদ।
১. এখন অব্রামের বয়স কত (১ পদ)?
২. অব্রামের জন্য ঈশ্বর কি শিক্ষা, আদেশ ও প্রতিজ্ঞা দিলেন (১-২ পদ)?
৩. অব্রামের জীবনে কি প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে (৩ পদ)?
৪. অব্রামের জন্য কোন নতুন নাম দেওয়া হয়েছে এবং কেন (৪-৮ পদ)?
৫. সারীর জন্য কোন নতুন নাম দেওয়া হয়েছে এবং কেন (১৫-১৬ পদ)?
প্রত্যাশা রাখ
বাইবেল পাঠ: আদি ৮:১-১৫ পদ।
১.দুপুর বেলায় অব্রাহামের কাছে কতজন অতিথি আসলেন? কোথা থেকে আসলেন (১-২ পদ)?
২. অতিথিদের জন্য অব্রাহাম ও সারা কি আয়োজন করলেন (৩-৮ পদ)?
৩. অতিথিগণ কিসের সংবাদ নিয়ে আসলেন (৯-১০ পদ)?
৪. সারা কি প্রশ্ন করলেন (১১-১২ পদ)?
৫. সদাপ্রভু কি কি প্রশ্ন করলেন (১৩-১৪ পদ)?
চিন্তার জন্য:
১. যখন মনে করেন আপনার আর শক্তি নাই, কোন উপায় নাই, তখন আপনার কি কি করা উচিত (লুক ১:৩৭; রোমীয় ৪:১৭-২২ এবং ফিলীপীয় ৪:১৩ পদ দেখুন)?
২. আপনার জীবনের জন্য একটি লক্ষ্য স্থির করুন এবং লক্ষপূরণে তাঁর হাতে আত্ম সমর্পনের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করুণ।
মুখস্ত পদ:
ইব্রীয় ১০:৩৬ পদ।
অধ্যয়ন ৫: অব্রাহামের প্রার্থনা
অব্রাহাম এতদিন নিজের অভাবের কথা চিন্তা করলেন। কিন্তু এখন তিনি অন্যদের দুঃখ দেখতে আরম্ভ করেন। দক্ষিণের দিকে অবীমেলক ছিলেন গোরার রাজা। এই রাজার কোন সন্তান ছিল না। অব্রাহাম সেই রাজার স্ত্রীর জন্য প্রার্থনা করলেন। আর সেই প্রার্থনার ফরে রাণীর সন্তান হল। অনেক সময় আমরা যখন অন্যদের জন্য প্রার্থনা করি ঈশ্বর আমাদের নিজেদের প্রার্থনার উত্তর দেন। অবীমেলকের স্ত্রীর জন্য প্রার্থনা করার পরে অব্রাহামের নিজের স্ত্রীর সন্তান হল। আমরা দেখতে পাই ঈশ্বর তার কথা রক্ষা করেন আর আমরা যখন তার আশীর্বাদ লাভ করার জন্য প্রস্তুত হই তখন তিনি আমাদের প্রার্থনার উত্তর দেন।
আলোচ্য প্রশ্ন:
মনোনীত স্ত্রী
বাইবেল পাঠ: আদিপুস্তক ২০:১-১৮ পদ।
১. অব্রাহাম তার স্ত্রীকে কোন্ কথা বলতে শিখালেন এবং কেন (২,১১ এবং ১৩ পদ)?
২. এই কথা কতটুকু সত্য বা কতটুকু মিথ্যা (১২ পদ)?
৩. গরারের রাজা না জেনে কি করতে চেয়েছিলেন এবং কেন করতে পারলেন না (২-৬ পদ)?
৪. গরারের রাজার জন্য ঈশ্বর কি আদেশ দিলেন (৭ পদ)?
৫. অব্রাহাম চেতনা প্রাপ্ত হয়ে তার মনোনীত স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে প্রার্থনা করলে কি ফল হল (৭,১৭ এবং ১৮ পদ)?
মনোনীত সন্তান
বাইবেল পাঠ: আদিপুস্তক ২১:১-৭ পদ।
১. এর আগে সারা অবিশ্বাসে হাসলেন (আদিপুস্তক ১৮:১২ পদ)। কিন্তু এবার তার কিসের হাসি (১-৩ পদ) ?
২. অব্রাহামের বয়স কত (৫ পদ)? প্রকাশ থাকে সে সময় সারার বয়স ৯০ বৎসর (আদিপুস্তক ১৭:১৭পদ)
৩. সারা কি স্বাক্ষ্য দিলেন (৬-৭ পদ)?
চিন্তার জন্য:
ক) সৎ ও সরল ভাবে চলবার জন্য আপনার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার (হিতোপদেশ ৩:৫-৬ পদ)?
খ) আপনার জীবনে যদি কোন অসরলতা থেকে থাকে তা স্বীকার করুন ও প্রভুর কাছে সমর্পিত হন (১ যোহন ১ঃ৯ পদ)।
মুখস্ত পদ: গীতসংহিতা ১৩৯:২৩-২৪ পদ।
অধ্যয়ন ৬: অব্রাহামের আনন্দ ও দুঃখ
ঈশ্বর তাঁর প্রতিজ্ঞা রক্ষা করলেন। অব্রাহাম ও সারা একটি সন্তান লাভ করলেন। তবে অবিশ্বাসের ফলও তাদের মধ্যে রইল। দাসীর গৃহে যে সন্তান জন্মগ্রহণ করল সেই সন্তানকে নিয়ে তাদের সমস্যা ও দুঃখ সৃষ্টি হল। বাইবেল বলে, ‘তোমরা ভ্রান্ত হইও না, ঈশ্বরকে পরিহাস করা যায় না, কেননা মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে।’ – গালাতীয় ৬:৭পদ।
আলোচ্য প্রশ্ন:
১. আনন্দের ভোজ:
ক) ভোজের আয়োজন কে করলেন এবং কেন (৮পদ)?
খ) এই মহাভোজ দেখে কে অসন্তুষ্ট হয়েছিল (৯ পদ)?
গ) সারা কি পরামর্শ দেন (১০ পদ)?
ঘ) ঈশ্বর কি আদেশ দিলেন এবং কেন (১২-১৩ পদ)?
২. প্রার্থনা শ্রবণকারী ঈশ্বর: (আদিপুস্তক ২১:১৮-২১ পদ)
ক) হাগার ও তার ছেলের কি অবস্থা হল (১৮-১৬ পদ)?
খ) হাগারের জন্য ঈশ্বর কি আদেশ, প্রতিজ্ঞা ও ব্যবস্থা করলেন (১৭-১৯ পদ)?
গ) সেই ছেলে বড় হলে, সে কি করত, কোথায় থাকত এবং কোথায় তার বিবাহ হল (২০-২১ পদ)?
চিন্তার জন্য:
১. অব্রাহাম ও সারার জন্য ঈশ্বর যে সন্তানের প্রতিজ্ঞা করলেন তা ২৫ বছর পরে তারা লাভ করলেন (১২:৪ পদ এবং ২১:৫ পদ তুলনা করুন)।
২. এতদিন ধরে ঈশ্বর তাদের প্রস্তুত করে ছিলেন বিশেষ একটি দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। এই সময়ের ভিতরে তারা কি কি শিক্ষা পেলেন এবং কিরূপে তাদের আত্মিক উন্নতি হয়েছিল (রোমীয় ৪:১৭-২২; ইব্রীয় ১১:১৯ পদ)?
৩. কোন্ কোন্ ঘটনা বা পরিবেশের মাধ্যমে ঈশ্বর আপনাকে ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালন করার জন্য তৈরী করেছেন?
৪. পরস্পরের জন্য প্রার্থনা করুন যেন সমস্ত দূর্বলতার উপর জয়লাভ করে বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও ধৈয্য ধরে সত্যে ও সাহসে ঈশ্বরের মনোনীত পথে চলতে পারেন।
মুখস্ত পদ: ১ম যোহন ৫:১৪ পদ।
অধ্যয়ন ৭: অব্রাহামের ভ্রাতৃপ্রেম
ঈশ্বরের কথামত অব্রাহাম ঊর থেকে কনান দেশ পর্যন্ত এসেছিলেন। ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি এই দেশ অব্রাহামের বংশধরদের জন্য দিবেন। কিন্তু এই পর্যন্ত অব্রাহাম প্রবাসী হিসাবে দেশের মধ্যে রয়েছেন। তিনি সর্ব অবস্থায় দেশের বাসীন্দাদের সাথে সদ্ব্যবহার করতেন ও শান্তি রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করতেন।
আলোচ্য প্রশ্ন:
প্রতিবেশীকে প্রেম কর
বাইবেল পাঠ: আদিপুস্তক ২১:২৫-৩৪ পদ।
১. অব্রাহামের অভিযোগ কি (২৫ পদ)?
২. মীমাংসা কিভাবে হয়েছে (২৬ ও ৩২ পদ)?
৩. শান্তি স্থাপন করার পরে অব্রাহাম কোথায় কিভাবে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি প্রকাশ করলেন (৩৩-৩৪ পদ)?
চিন্তার জন্য:
ক) কি মন মানষিকতা নিয়ে আপনি প্রতিবাসীদের সাথে বসবাস করবেন?
খ) সমস্যা সমাধানে আপনার ভ‚মিকা কি হওয়া উচিৎ এবং কেন? উত্তর খুঁজতে সাহায্য নিন (রোমীয় ১২:১৭-১৯ এবং মার্ক ১২:৩১ পদ)।
মুখস্ত পদ: রোমীয় ১২:১৮ পদ।
অধ্যয়ন ৮: অব্রাহামের বিশ্বস্থতা
মানুষের জন্য ঈশ্বরের প্রথম ও মহৎ আজ্ঞা আমরা যেন আমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ, সমস্ত প্রাণ, সমস্ত শক্তি ও সমস্ত চিত্ত দিয়ে তাঁকে প্রেম করি। কোন কোন সময় তিনি আমাদের পরীক্ষা করেন। আমরা কি তাঁকে বেশী প্রেম করি না অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে বেশী প্রেম করি?
আলোচ্য প্রশ্ন:
ঈশ্বরকে প্রেম কর
বাইবেল পাঠ: আদিপুস্তক ২২:১-১৯ পদ।
১. আদেশ ও প্রস্তুতি:
ক) অব্রাহামের জন্য ঈশ্বর কি আদেশ দিলেন এবং কেন (১-২ পদ)?
খ) অব্রাহাম কখন প্রস্তুতি নিতে আরম্ভ করলেন? কি কি যোগাড় করলেন (৩ ও ৬ পদ)?
গ) যাত্রা কত দিনের ছিল (৪ পদ)?
ঘ) চাকরদের জন্য অব্রাহাম কি কি কথা বলে গেলেন (৫ পদ)?
ঙ) ইসহাক কি প্রশ্ন করলেন এবং অব্রাহাম কি উত্তর দিলেন (৭-৮ পদ)?
২. মহাপরীক্ষা:
শেষ পর্যন্ত অব্রাহাম ঈশ্বরের কথা মত কি কি ব্যবস্থা করলেন এবং কেন (৯-১০ পদ এবং ১১:১৭-১৯ পদ)?
৩. ঈশ্বরের বাণী:
ঈশ্বর কি আদেশ দিলেন এবং কেন (১১-১২ পদ)?
৪. ঈশ্বরের মেষ:
ক) ১. মেষ কোথায় কি অবস্থায় ছিল (১৩ পদ)?
২. সে মেষ নিয়ে অব্রাহাম কি করলেন (১৩ পদ)?
খ) সে জায়গার জন্য কি নাম রাখা হয়েছে এবং কিসের ভবিষ্যৎ বাণী বলা হয়েছে (১৪ পদ)?
৫. ঈশ্বরের পুরুষ্কার:
ক) অব্রাহামের জন্য কি কি আর্শীবাদ দেওয়া হয়েছে এবং কেন (১৫-১৮ পদ)?
খ) ১৯ পদের পূর্ণমিলন ও যাত্রা কেমন ছিল, কি মনে হয়?
একটু ভাবুন:
১. ঈশ্বরের প্রতি আপনার যে প্রেম, ভক্তি ও বাধ্যতা রয়েছে তা কি তিনি কোন দিন পরীক্ষা করেছেন? কিভাবে করেছেন? ভবিষ্যৎ পরীক্ষার জন্য আপনি কিভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন (যাকোব ১:২-৪ পদ)?
২. যুবক ইসহাকের মত বিশ্বাস ও বাধ্যতার পরীক্ষায় আপনার প্রস্তুতি কিরূপ?
মুখস্ত পদ: হিতোপদেশ ৩:১১-১২ পদ।
উপসংহার
“যিহোবা- যিরি (সদাপ্রভু যোগাইবেন)”
অব্রাহাম ও ইসহাক মোরিয়া পর্বত ত্যাগ করে বাড়ীতে ফিরে গেলেন। এই সমস্ত ঘটনার কথা বলে শুনে লোকেরা বলতে আরম্ভ করল “সদাপ্রভুর পর্বতে যোগান হইবে”।
এই কথা যে সত্য আমরা তা বাইবেলে প্রমাণ পাই। প্রায় ২০০০ বছর পরে সেই একই পাহাড়ের উপরে আপনার, আমার জন্য ঈশ্বর একটি মেষ যোগালেন। পরবর্তী সময় সে জায়গার নাম হল যিরুশালেম (২বংশাবলী ৩:১ পদ)। আর সেই যিরুশালেমে ঈশ্বরের মেষশাবক রূপে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরলেন। আমরা এখন দু’টো ঘটনা তুলনা করব।
১. অব্রাহাম ও ইসহাক একটি গাধা নিয়ে মোরিয়া পর্বত পর্যন্ত যাত্রাকরলেন। খর্জুর রবিবারে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট একটি গাধা নিয়ে যিরুশালেমে গেলেন।
২. ইসহাক কাঁধে করে সেই বেদীর কাঠ বহন করে নিয়ে গেছেন। সেই কাঠের উপরে ইসহাককে বেঁধে রাখা হয়েছে। যীশু খ্রীষ্ট একই জায়গায় কাঁধে ক্রুশ কাঠ নিয়ে গেলেন আর সেই ক্রুশের উপরে যীশুকে প্রেকে গেঁতে রাখা হয়েছে।
৩. অব্রাহাম প্রস্তুত হলেন ঈশ্বরের কাছে তার একমাত্র পুত্রকে উৎসর্গ করতে। ঈশ্বর আমাদের এত ভালবেসেছেন তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকেও সেই ক্রুশের উপর সমর্পন করলেন।
৪. শেষ পর্যন্ত ইসহাককে মরতে হলো না। তার পরিবর্তে একটি মেষ মৃত্যু বরণ করল। ঈশ্বর তার পরিবর্তে সেই মেষ যোগাড় করলেন। আমাদের পাপের বেতন মৃত্যু। আমাদের সবাইকে নিজ নিজ পাপের জন্য মরতে হতো। কিন্তু ঈশ্বর চান না যে আমরা বিনষ্ট হই। তাই তিনি আমাদের পরিবর্তে একজন নিষ্পাপ মানুষকে যোগাড় করলেন। সেই মানুষ হলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ( ১পিতর ১:১৯ পদ)। যীশু সম্মন্ধে বলা হয়েছে তিনি ঈশ্বরের মেষ শাবক যিনি জগতের পাপ ভার নিয়ে যান (যোহন ১:২৯ পদ)।
এই যীশু আমাদের পরিবর্তে পাপের শাস্তি বহন করলেন। (২করিন্থিয় ৫:২১পদ) তিনি ঈশ্বরের শেষশাবক হয়ে আমাদের পরিবর্তে মোরিয়া পর্বতে অর্থ্যাৎ যিরুশালেমে মৃত্যু বরণ করলেন।
৫. ইসহাক মরতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি তার বাবার বাধ্য ছিলেন। যীশু ও তাঁর পিতার বাধ্য ছিলেন। তিনি ঈশ্বরের ঈচ্ছা পূর্ণ করতে এই জগতে এলেন। আমাদের জন্য তাঁর প্রাণ দিতে আসলেন। ঈশ্বর অব্রাহামের ছেলেকে মরতে দিলেন না। কিন্তু তার নিজ পুত্রকে ক্রুশের উপর মরতে দিলেন। বাইবেল বলে তিনি নিজ পুত্রের প্রতি মমতা করলেন না। কিন্তু আমাদের সকলের নিমিত্ত তাহাকে সমর্পণ করিলেন (রোমীয় ৮:৩২ পদ)।
৬. ইসহাক মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসলেন। তাকে মরতে হলো না। যীশু ক্রুশের উপরে মরলেন এবং তৃতীয় দিনে কবর থেকে উঠলেন। বাইবেল বলে ঈশ্বর মৃত্যুর যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে তাকে জীবিত করে তুলেছেন। কারণ তাকে ধরে রাখবার সাধ্য মৃত্যুর ছিল না (প্রেরিত ২:২৪ পদ)।
৭. অব্রাহাম বলেছিলেন হোমের জন্য ঈশ্বর মেষ যোগাবেন। আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য একটি মেষের প্রয়োজন ছিল। ঈশ্বর আমাদের জন্য সেই মেষ যোগাড় করেছেন। বাইবেল বলে আমরা সকলে মেষগনের ন্যায় ভ্রান্ত হইয়াছি, প্রত্যেকে আপন আপন পথের দিকে ফিরিয়াছি। সদাপ্রভু আমাদের সকলের অপরাধ তাহার উপর বর্তাইয়াছেন (যিশাইয় ৫৩:৬ পদ)।
একটি প্রশ্ন:
এই সমস্ত জেনে আমার কি করা উচিৎ?
১. আমার উচিত, আমি সেই ভ্রান্ত মেষ, যার পরিবর্তে যীশু তাঁর জীবন দিলেন, এই কথা স্বীকার করা।
২. আমার উচিত, যীশু যে আমার মুক্তি দাতা তাকে বিশ্বাসে গ্রহণ করা।
৩. আমার উচিত সারাজীবন একমাত্র তাঁরই প্রশংসা ও সেবা করা।
শাস্ত্র বলে, ‘মেষশাবক, যিনি হত হইয়াছিলেন, তিনিই পরাক্রম ও ধন ও জ্ঞান ও শক্তি ও সমাদর ও গৌরব ও ধন্যবাদ, এই সকলই গ্রহণ করার যোগ্য’ (প্রকাশিত বাক্য ৫:১২ পদ)।
একটি প্রার্থনা:
যারা যীশুকে গ্রহণ করতে চায় তারা এই প্রার্থনা ব্যবহার করতে পারে:
প্রভু যীশু, আমি স্বীকার করি তুমি ঈশ্বরের মেষশাবক রূপে এই জগতে এসেছ আমাকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য। আমি একজন ভ্রান্ত মেষ, তোমার বিরুদ্ধে অনেক পাপ করেছি। তুমি আমার পাপ সকল ক্ষমা কর এবং চিরদিনের জন্য আমার জীবনে বাস কর – আমেন।
একটি প্রতিজ্ঞা:
আর সমস্ত অনুগ্রহের ঈশ্বর, যিনি তোমাদিগকে খ্রীষ্টে আপনার অনন্ত প্রতাপ প্রদানার্থে আহ্বান করিয়াছেন, তিনি আপনি তোমাদের ক্ষণিক দুঃখভোগের পর তোমাদিগকে পরিপক্ক, সুস্থির, সবল, বদ্ধমূল করিবেন ১ পিতর ৫:১০ পদ।
একটি গানঃ
যিহোবা যিরি, আমার ঈশ্বর তাঁর
অনুগ্রহে জীবন বরে যায়, হ্যাঁ যায় হ্যাঁ যায়।
তিনি মোদের অভাব পূর্ণ করিবেন
তার অপুরন্ত ধন অনুসারে (২)
তিনি দূতদের উপরে মোদের রক্ষার ভার
দিয়েছেন, ভালবেসে তোমায় আমায়,
ভালবেসে সবায়।